কারিকুলামে অনগ্রসর ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্তির পরামর্শ ইউজিসির
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে সমাজের অনগ্রসর ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার বিষয়গুলো অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনার ২য় ত্রৈমাসিক অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা সংক্রান্ত একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, সমাজের অনগ্রসর ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে এসডিজি’র লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এসব জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের কল্যাণ, উন্নয়ন ও অধিকার সুরক্ষার মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাবে। এসব জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা এবং দ্বৈত মানসিকতা পরিহার করতে হবে। এক্ষেত্রে বিষয়ে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে তিনি জানান।
ইউজিসি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন করতে হলে শুদ্ধাচার চর্চা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে হবে। অনুমোদিত বিধি ও নীতিমালা অনুযায়ী জনবল নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদোন্নয়নের ব্যবস্থা করতে হবে। পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান বিধি ও নীতিমালা ভঙ্গ করা যাবে না। অভিন্ন নীতিমালা পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই।
প্রফেসর আলমগীর আরও বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক নিয়োগ-পদোন্নয়নের যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণের নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে। শীঘ্রই কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ এবং আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা জোরদার করতে পৃথক নীতিমালা করা হচ্ছে। এসব নীতিমালা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চূড়ান্ত করা হবে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ ও পদোন্নয়নে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি দূর হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পেনশন নিয়ে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন। বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব আইন দিয়ে পরিচালিত হয় এবং পেনশন নিয়ে এখানে কোন ধরনের অনিয়মের সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, দেশে বর্তমানে ৬০ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বড় ও পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় নেতৃত্ব দিবে এবং নতুন বিশ্ববিদ্যালয়কে পথ দেখাবে। প্রথম সারির এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন অনিয়ম হলে, তদন্ত করা ইউজিসি’র জন্য বিব্রতকর।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কমিশনের আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক ড. সুলতান মাহমুদ ভূঁইয়া।
ফেরদৌস জামান বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শুদ্ধাচার বজায় রাখতে হবে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির লক্ষ্য অর্জনে আন্তরিক হতে হবে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
ইউজিসির উপসচিব ও জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের ফোকাল পয়েন্ট মো. আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় কর্মশালায় ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল ও নৈতিকতা কমিটির ফোকাল পয়েন্টগণ অংশগ্রহণ করেন।