বিশ্ববিদ্যালসমূহকে উদ্ভাবনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার আহবান ইউজিসি সদস্যের
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশে রূপান্তর করতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের কোন বিকল্প নেই। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্প সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালগুলো এ ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। একটি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে দেশের বিশ্ববিদ্যালগুলোকে গবেষণা ও উদ্ভাবনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
‘শিক্ষা বিভাগীয় কর্মচারী (শিক্ষক) কর্তৃক অর্জিত পিএইচডি অভিসন্দর্ভ ও শিক্ষাদান সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সামঞ্জস্য নিরূপণ’ শীর্ষক একাডেমিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন আজ (রবিবার, ৩০ অক্টোবর) একথা বলেন। ইউজিসি’র সভাকক্ষে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
ইউজিসির গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহীন সিরাজ ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ সহযোগিতামূলক গবেষণা গ্রকল্প গ্রহণ ও সেগুলো বাস্তবায়নে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রযুক্তির আমদানি নির্ভরতা কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উদ্ভাবনী পরিবেশ তৈরি করতে হবে। শিক্ষা কারিকুলামে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুসারে দক্ষ গ্রাজুয়েট তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা উদ্ভাবনের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ইউজিসি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণাকর্ম যেন ব্যাহত না হয় সেজন্য বিগত বছরগুলোতে গবেষণাখাতে বাজেট উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যায়গুলোতে গবেষণার জন্য ১৭৪ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিগত অর্থবছরের তুলনায় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ২৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামী বছরগুলোগুলোতেও বাজট বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সেমিনারে উপস্থিত ইউজিসি ও দেশের ০৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫জন শিক্ষাবিদ পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে ইউজিসি’র প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
সেমিনারে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোঃ আবু তাহের, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর দে, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আশরাফুল আলম, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. অলক কুমার পাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. খালেদ হোসাইন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. আরজুমান্দ আরা বানু, প্রফেসর ড. মিল্টন বিশ্বাস ও গণিত বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ সারওয়ার আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. মরিয়ম বেগম, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শফিক আহমেদ, ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. আবু মোঃ দেলোয়ার হোসেন ও ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগর প্রফেসর ড. মোঃ আফজাল হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর (অবঃ) ড. জালাল উদ্দিন আহমেদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দীন কাদেরী বিজ্ঞ সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন সরকারি কলেজের ১৬ জন শিক্ষকের পিএইচডি অভিসন্দর্ভ মূল্যায়নপূর্বক শিক্ষাদান সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সাথে অর্জিত ডিগ্রির সামঞ্জস্য নিরূপণে এই একাডেমিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।